পিন্টু কুমার সরকার, স্টাফ রিপোর্টারঃ মটরসাইকেল,স্বর্ণের কানের দুল,বাইসাইকেল, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন রকম পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে র্যাফল ড্রর টিকিট। লাকী কুপনের টিকেটে ব্যবহার করা হয়েছে মুজিব বর্ষের লোগো। লটারি নামটক জুয়ার টিকেটে মুজিব বর্ষের লোগো ব্যবহার দেখে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের। ফুসে উঠেছে লটারির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আন্দোলন।
এদিকে তথাকথিত লটারির লোভে পড়ে গ্রামের নিরীহ মানুষ কিনছে এসব লটারির কুপন । মেলার আয়োজক ও র্যাফেল ড্র-সংশ্লিষ্টরা এভাবে প্রতিদিন মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সোমবার (৩০ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এরআগে গত ১৯ মে দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা হস্ত কুঠির শিল্প মেলার উদ্বোধন করেন সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারি ও আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আফরোজা বারি।
এদিকে, আয়োজক কমিটির এসব লোভনীয় প্রস্তাবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, প্রতারণার শিকার হচ্ছে। শিশু, বয়জেষ্ঠ্য থেকে সকল শ্রেণির মানুষ লোভে পরে কিনছে এসব লটারি। এসব কারণে এলাকায় চুরি ও অন্যায়-অত্যাচার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
তবে, প্রশাসন বীর মুক্তিযোদ্ধা হস্ত কুঠির শিল্প মেলার অনুমোদন দিলেও লটারি বা র্যাফেল ড্রয়ের অনুমোদন দেয়নি। অবৈধ কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা হস্ত কুঠির শিল্প মেলা। মেলার পেছনের দিকে র্যাফেল ড্রয়ের মঞ্চে সাজিয়ে রাখা হয়েছে টিভি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেলসহ নানা রকম পুরস্কার। মাইকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এই মঞ্চের সামনেই টেবিল-চেয়ার পেতে লটারি বিক্রি করছেন একাধিক লটারি বিক্রেতা। এখান থেকে লটারি কিনছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিশুসহ অনেকেই। এছাড়াও শতাধিক গাড়িতে ৩০০-৪০০টি করে টিকেট নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করছে লটারি। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ লাখ টাকার লটারি বিক্রি হচ্ছে। এতে সর্বশান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে, হস্ত কুঠির শিল্প মেলার নামে লটারি জুয়া চলায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে এরাকাবাসির মাঝে। মেলার নামে লটারি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। এসব লটারি-বানিজ্য বন্ধ না হলে যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান বলেন, আমরা শুধু হস্ত কুঠির শিল্প মেলার অনুমতি দিয়েছি। সেখানে লটারি চালানোর কোন সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।