পিন্টু কুমার সরকার,স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তার বৃকে জেগে উঠা দূর্গম চরের সরকারি খাস জমি বিক্রির নামে এক ইউপি সদস্যের জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রচারের পর জেলাজুড়েই তোলপাড়া শুরু হয়েছে। প্রতিবেদনটি নজরে আসায় নড়েচড়ে বসেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
এরইমধ্যে ঘটনাটি সরেজমিন তদন্তের জন্য তারাপুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে (তৌশিলদার) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) কর্মকর্তা মাহামুদ আল হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রকাশিত প্রতিবেদনে খাস জমি বিক্রি ও জালিয়াতির যে ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে তা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তে সার্ভেয়ার দিয়ে চরের খাস জমিগুলোর পরিমাণসহ সীমানা নির্ধারণ করা হবে। কোন জমি দখল করে কেউ বসতি বা চাষাবাদ করছে কিনা তা চিহ্নিত করা হবে। দ্রুতসময়ে সরেজমিনে তদন্ত করে তিনি প্রতিবেদন জমা দিবেন। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের কেউ তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে সরকারি খাস জমি বিক্রি ও জাল দলিল সৃজনের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, তারাপুর ইউনিয়নের চরখোর্দ্দা (বৈরাগিপাড়া) মৌজার তিস্তার চরে জেগে উঠা সরকারি খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিহীন পরিবারের কেউ বসবাস কেউবা চাষাবাদ করে আসছেন। সেই জমি মালিকানা করে দেয়ার জন্য ভূমিহীনদের প্রস্তাব দেন তারাপুর ইউপির ১ নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) ওবায়দুর রহমান মিঠু মিয়া। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠু মিয়া সবই ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।
ভূমিহীনদের অভিযোগ, তিনটি দাগের ১ একর ৩৩ শতাংশ সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমি দলিল করে দিতে ১৫টি পরিবারের কাছে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মিঠু মিয়া। এরমধ্যে গেল জানুয়ারী মাসে মিঠু মিয়া দুইজনের হাতে ১৯৬৩ ও ১৯৮৩ সালের দুটি দলিলসহ খারিজ খতিয়ানের ডুপ্লিকেট কার্বন রশিদ কপি দেন। কিন্তু সন্দেহ হলে ভুমি অফিসে গিয়ে যাচাই করলে দলিল দুটি ভূয়া ও জাল হিসেবে ধরা পড়ে।
প্রতারণার ঘটনা বুঝতে পেরে টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহনা করে মিঠু মিয়া। এতে দিশেহারা চরে বসবাস করার দরিদ্র মানুষরা। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের পক্ষে একাব্বর আলী নামে একজন সুন্দরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে টাকা ফেরতসহ অভিযুক্ত মিঠু মিয়ার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী।