লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের এক কর্মচারী শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চালিয়েই তিনতলায় উঠার খবর পাওয়া গেছে। তিনি ওই হাসপাতালের একজন কর্মচারীর (ওয়ার্ড বয়)। যিনি প্রতিনিয়তেই মোটরসাইকেল চালিয়েই সদর হাসপাতালের ৩ তলায় উঠেন বলে একটি বিশ্বাস্থ্য সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
শাহজাহান আলী লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ড বয় হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সাহেব মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট আধুনিক আড়াই শত শষ্যা হাসপাতালের ৩ তলার সার্জারী ওর্যাডে ওয়ার্ড ডিউটিতে আসে মোটরসাইকেল চালিয়ে। হাসপাতালের নিজস্ব গ্যারেজ রয়েছে সেখানে রাখেন না মোটর সাইকেল। হাসপাতাল জুরে অবহেলার ছাপ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নেই। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ৮ টায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের অসুস্থ্য রোগীর ওপরে নেয়ার ষ্টেচার সমান তরাল বিকল্প সিঁড়ি দিয়ে মোটর সাইকেল চালিয়ে ওপরে ওয়ার্ড বয়। এ সময় হাসপাতালের প্রতিটি ওযার্ডে বাইকের কালো ধোঁয়া ও বিকট শব্দে অসুস্থরোগীগণ অসস্থিতে পড়ে। ওযার্ড বয় তার বাইকটি তৃতীয় তলার সার্জারী ওয়ার্ডেও বাথরুমের সামনে রেখে ডিউটি করে। এটা তার নিত্য দিনের কাজ। এতবড় অন্যায়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরেও আসেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার ডিউটি থাকলেই, তিনি এভাবে মোটর সাইকেল নিয়ে উঠেন। মোটর সাইকেলের শব্দে অনেক সময় প্রথম ও দ্বিতীয় তলার রোগীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। অনেক রোগী ভয়ে বেড থেকে উঠে বেরিয়ে যান। পরে হাসপাতালের লোকজনের অনুরোধে তারা আবার বেডে ফিরে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনরা জানান, গত শুক্রবার রাতে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করতে সদর হাসপাতালে আসেন ওয়ার্ড বয় শাহজাহান আলী। তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি নিচতলায় গ্যারেজ থাকলেও সেখানে না রেখে চালিয়েই হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে ৩ তলায় উঠেন। এ সময় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগসহ আশপাশের রোগীরা বাধা দিলেও তিনি তোয়াক্কা করেন না।
নাম প্রকাশে অন্নইচ্ছুক এক রোগী বলেন, তিন-চার দিন হলো সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এই ওয়ার্ড বয় (শাহজাহান আলী) যেদিন দায়িত্বে থাকেন, সেদিন তিনি হেঁটে ওঠেন না, মোটরসাইকেল চালিয়ে ওপরে ওঠেন। এতে উচ্চশব্দে রোগীরা মনে করে ভবনটি ভেঙে পড়ছে। এতে তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে হৃদরোগীরা ভয় পান বেশি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনো খেয়াল করছে না।
এ বিষয়ে ওযার্ড বয় শাহজাহান আলী জানান, হাসপাতালের নিচের গ্যারেজে বা অন্যস্থানে মোটর সাইকেল রাখলে কে বা কারা মোটর সাইকেলের হাওয়া ছেড়ে দেয়। মোটর সাইকেল নিরাপদে রাখতে এমনটা করেছে।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু লোক নিয়মের বাইরে কাজ করে পরিবেশ নষ্ট করছে। শাহজাহান আলী মাস্টার রোলে কাজ করেন। সে যদি এমন কাজ করে থাকেন, অবশ্যই তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।