মোঃ ইমরান ইসলাম, নওগাঁ ।। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বালাহৈর গ্রামের বাবা মায়ের আদরের কন্যা সন্তান মলিনা রানী (৩৮) কে বিয়ে দেন একই উপজেলার নিমদিঘী গ্রামের মন্টুর সাথে। বিয়ের পরপরই স্বামীর কথা মতো দু'জনই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে স্বামী নাম রাখা হয়, দেলোয়ার হোসেন ও স্ত্রীর নাম মরিয়ম বিবি।
পরর্বতীতে কয়েক বছরে তাদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তান ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম হয়।কিন্তু ভবঘুরে স্বামীর নির্যাতনে যেন সংসার হয়ে ওঠে নরক। একদিন স্ত্রী- সন্তানকে ফেলে রেখে উধাও স্বামী।তখন মরিয়ম বিবি তিন সন্তানকে নিয়ে নামতে হয় জীবনযুদ্ধে।স্বামীর কোন জায়গা জমি না থাকায় হতদরিদ্র মরিয়মের স্থান হয়নি।ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে আসতে হয় বাপের বাড়ি।আত্মীয়-স্বজনের চাপে পরবর্তীতে আবারও সে ফিরে আসে হিন্দু ধর্মের দিকে।
এখন মলিনা রানীর মা বাসন্তী রানী (৬৬), ছেলে আল-আমিন (১৭), আব্দুল মমিন (১২), ফাতেমা আক্তার (৯) নিয়ে তার সংসার। প্রায় ১২ বছর আগে স্বামী তাদের রেখে চলে গেছেন, আজও ভবঘুরে স্বামীর দেলোয়ার হোসেনের নেই কোন খোঁজখবর। সন্তানদের পড়ালেখা আর সংসার খরচ জোগাতে করতে হয় মানুষের বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ।
বর্তমান বড় ছেলে এবার একাদশ শ্রেণিতে, মেজো ছেলে আব্দুল মমিন মাদরাসায় পড়ে কোরআনের হাফেজ আর ছোট মেয়ে ফাতেমা স্কুলে পড়ছে। ছেলে মেয়েরা বড় হয়েছে, তাদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন মলিনা রানী হিমসিম খাচ্ছে। এখন পরিবারের খরচ জোগাতে নিয়ামতপুর বাজারে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে পান, সিগারেট, বিড়ি বিক্রয় করে সংসার চালায়।
আব্দুুল মমিন বলেন, আমার বাবা আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে আমার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে,খুব কষ্ট করে আমাদের লেখাপড়া করাচ্ছে।আজ বাবা থাকলে হয়তো মাকে এতো কষ্ট করতে হতো না।মলিনা রানী জানান, খেয়ে না খেয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করাচ্ছি।
আমি এ পর্যন্ত কোন জায়গা থেকে সাহায্য সহযোগিতা পায়নি।ছেলে মেয়েদের ভালো পোশাক ও ভাল খাবার মুখে তুলে দিতে পারি না।খুব কষ্ট করে সংসার চালায়। আমি বাজারে এখন এ দোকান চালায় তাতেও সংসারে অভাব অনটন থাকায় বড় ছেলেকে করোনায় স্কুল ছুটি থাকায় কাজের উদেশ্যে ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি।