বাংলার সংবাদ ডেস্ক ।। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বিপর্যস্ত নিজের এলাকার জনগণের দুর্ভোগ তুলে ধরে ‘আর কোনো দাবি নাই; ত্রাণ চাই না, বাঁধ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহাজাদা।
বুধবার (১৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবির কথা জানান।
তিনি বলেন, ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে আমি গিয়েছিলাম। তখন তারা এই প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে তাদের দাবির কথা বলেছেন।
শাহাজাদা বলেন, আমরা কয়েকদিন আগে ইয়াসের দ্বারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আপনারা জানেন ইয়াস দক্ষিণাঞ্চলে কী ধরনের তাণ্ডব চালিয়েছে। আমার ওখানে অনেকগুলো চর আছে। যার চার পাশে অনেকগুলো বড় বড় নদী আছে। যার এক একটির ব্যাস কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত। কোনো কোনোটি সাত-আট কিলোমিটার পর্যন্ত।
‘আপনারা আগুনমুখো নদীর কথা শুনেছেন, যা এক ভয়ঙ্কর নদী। এর পাশে চর কাজল, চর বিশ্বাস, চর হাদি, চর বুরহান, চর গুদাম নামের চর আছে। এই চর গুদামে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে গিয়ে বীজ বর্ধন গুদাম উদ্বোধন করেছিল। এই চরগুলোর অনেকগুলোতেই চার পাশে উচুঁ বেড়িবাঁধ নাই।’
‘ইয়াসের ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত জোয়ারে সেদিন উপকূলের মানুষ তাদের ফসলের মাঠ হারিয়েছে। তাদের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরে ও ঘেরে তারা মাছ চাষ করেছিল, যা সাগরে ভেসে গেছে্’
শাহাজাদা বলেন, আমরা সেখানে গিয়েছিলোম ত্রাণ নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী সেখানে জরুরি ত্রাণ বরাদ্দও দিয়েছেন। আপনারা জানেন অন্যান্য অঞ্চলেও মানুষ ত্রাণ নিয়ে রোষানলে পড়েছে। আমরাও জনগণের রোষানলে পড়েছিলাম।
সেখানকার মানুষ আমাকে বলেছে, আমরা ‘ত্রাণ চাইনা, বাঁধ চাই; আর কোনো দাবি নাই’। তারা এই দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছিল। আমি সেই এলাকারই মানুষ। আমি বিচ্ছিন্ন কেউনা।’
এ কথা বলেই শাহাজাদা তার সামনে থাকা একই দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে জাতীয় সংসদের কাছে বাধেঁর দাবি তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঘূর্ণিঝড় বা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বে অনুকরণীয়। এই যে করোনা’র মত ভয়াবহ মহামারি তাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যথথোপযুক্ত নির্দেশনায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায় নাই। আমার নির্বাচনী এলাকার চার দিকেই নদী বেষ্টিত। একদিকে তেতুলিয়া, বুড়াগৌরাঙ্গ ও আগুনমুখা। নদীর নাম শুনলেই এর অবস্থা অনুমান করা যায়। ইয়াসের সময় পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানি ও বাতাসের চাপে এই নদীগুলো তার ভয়াবহতা নিয়ে স্ব-রূপ প্রকাশ করেছে। আমার এলাকার মধ্যে প্রচুর চর আছে। যার মধ্যে চরকাজল, চরবিশ্বাস, চরবোরহান, চরহাদী ও চর ভুতাম উল্লেখযোগ্য। এই চর ভুতামে প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে বীজ বর্ধন খামার আছে এবং প্রধানমন্ত্রী নিজে এই চরে গিয়ে এটা উদ্বোধন করেছিলেন। এই চরটিও ভেঙে অর্ধেক হয়ে গেছে। আমাদের এই চরগুলোর মধ্যে বেশির ভাগগুলোতেই বেরি বাধঁ নেই। যাও আছে তাও দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারের অভাবে বহু জায়গায় বিলিন হয়ে গেছে।
শাহজাদা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সারা জীবন চ্যালেঞ্জ নিয়েই সফল হয়েছেন। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা তার নামের সাথে এখন পরিপূরক। তার সরকারের এই বাজেট অবশ্যই সফল হবে এবং বাজেট ব্যবসাবান্ধব হওয়ায় আশাকরি দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি বিনিয়োগ করবে যা বেকারদেরকে চাকরির সুযোগ করে দিবে।