স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক বিভাগ মোটা অংকের টাকার বিনিময় চলছে বদলী বাণিজ্যে অভিযোগ উঠেছে। আর এসব অভিযোগ উঠেছে জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (জেটিআই) ছহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। সেই সাথে জেটিআই ছহির উদ্দিন অফিসকেই করেছেন ডাইনিং রুম, রান্না ঘর আর ঘুমানোর জন্য পেতেছেন বিছানাপত্র। দেখলে বাসা মনে হলেও এটা তার অফিস রুম। জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় শহর লালমনিরহাট। এ জেলা শহর থেকে পুরো উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শত শত কোয়ার্টার নির্মাণ করা হলেও ব্যবহার অনুপযোগী দেখিয়ে অধিকাংশ রয়েছে অবৈধ দখলদারের দখলে। অপরদিকে আবাসন সংকট দেখিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা অফিসকেই বাসা বানিয়ে রেখেছেন। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জুনিয়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ছহির উদ্দিনের অফিসও তেমনটিই। কাগজ কলমে অস্থায়ী অফিস কক্ষ উল্লেখ্য থাকলেও বাস্তবতায় সেই রুমেই তিনি বসবাস করছেন দীর্ঘ দিন ধরে। মাঝে মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এলে ওই সময় টুকুর জন্য সব পরিষ্কার করে অফিসের পরিবেশ তৈরি করা হয়। পরিদর্শন শেষ হলে পুনরায় বাসা হিসেবে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি বিশ^াস্থ্য সুত্র জানান, রেলওয়ের পরিবহন খাতকে নিয়ন্ত্রণ করেন লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট অফিস। এ ডিভিশনের আওতাধীন ৭২টি ষ্টেশন ও ৬৭৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে। উক্ত ষ্টেশনগুলো পরির্দশক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (জেটিআই) ছহির উদ্দিন। তিনি প্রতিদিন কোন না কোন ষ্টেশন পরির্দশনের পাশাপাশি ট্রাফিক বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন কর্মকর্তা/কর্মচারীর কাজের দেখভাল করেন। আর এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময় বদলী বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে তিনি ঠিকমত ষ্টেশন পরির্দশন করছেন না। টাকার বিনিময় কারণে অকারণে বিভিন্ন ভুলভাল অজুহাত তুলে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বদলী করছেন। জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (জেটিআই) ছহির উদ্দিনের দায়িত্বের অবহেলায় সম্প্রতি সময়ে কাউনিয়া রেল ষ্টেশনের টিকিট বিক্রি ১মাস ২০দিনের ৩৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫শত টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকে মামলা হয়েছে। কাউনিয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই তিস্তা রেল ষ্টেশনে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টিকিট বিক্রির টাকাও সরকারী কোষাগারের জমা হয়নি। ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় আগে গোপনে ধামাচাপা দিতে তড়িগড়ি করে সরকারী কোষাগারে টাকা জমা করা হয়। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জুনিয়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ছহির উদ্দিনের অফিস। সেই রুমেই তিনি বসবাস করছেন দীর্ঘ দিন ধরে। সেখানে বসে ও শুয়ে পুরো ডিভিশনাল নিয়ন্ত্রণ করেন মোবাইলে। লালমনিরহাট রেলওয়ের জুনিয়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ছহির উদ্দিন বলেন, এটি আমার বাসা নয় অফিস। কিন্তু কাজ শেষে একটু বিশ্রাম নিতেই এখানে বিছানা পাতা রয়েছে। মূলত আমার বাসা রংপুর শহরে। সেখান থেকে এসে অফিস করি। আমার কাজতো মাঠেই বেশি। এ বিষয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (ডিটিএস) মোছাঃ খালিদুননেছা একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তার রিসিভ করেননি। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ সুফি নূর বলেন, এর আগে পরিদর্শনে গিয়ে তার অফিসে বাসার আসবাবপত্র দেখতে পেয়েছিলাম। যা সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি আবার অফিসকে বাসার মতো করে ব্যবহার করছেন, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।