স্টাফ রিপোর্টার ॥ লালমনিরহাটে কৃষকের স্বপ্নের বোরো ধান মাঠ জুড়ে পাকতে শুরু করেছে। ধান ঘরে তুলতে প্রস্তুত কৃষান কৃষানী। ঠিক সেই মুহুর্তেই আশাবাদী ফলনের বাধা হয়ে দাড়িয়েছে নেকব্লাষ্ট ধানের রোগ। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো লাভ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
লালমনিরহাট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, চলতি বোরো মৌসুমে লালমনিরহাট জেলা সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষাবাদ হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যা (লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৪৫০ হেক্টর বেশি)। ৫টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাকতে শুরু হওয়া ধান ক্ষেত গুলোতে আক্রমণ করেছে নেকব্লাস্ট। এ রোগের প্রভাবে খেতের ধানের শিষ আস্তে আস্তে সাদা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক ব্যবহার করেও নেকব্লাষ্ট প্রতিকার করতে পারছে না কৃষকরা।
এতে হতাশ হতে হচ্ছে ফসল নিয়ে স্বপ্নবাজ এ কৃষকদের। কৃষকরা জানান, অনেক জমির বোরো ধানের শিষ সাদা হয়ে গেছে। শিষের গোড়ায় প্রথমে এ রোগ দেখা দিয়ে ক্রমান্বয়ে তা পুরো শিষকে গ্রাস করে। এ অবস্থায় কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কুলাঘাট এলাকার কৃষক আব্দুল মোতালেব বলেন, আমার ধান প্রায় পেকে গেছে, ধানের গাছ দেখে ভালো ফলনও হবে মনে হয়। কিন্তু ক্ষেতের কিছু কিছু অংশে নেকব্লাষ্ট সংক্রমণ হওয়ায় চিন্তায় আছি। দৈলজোর এলাকার কৃষক জয়নুল আবেদীন বলেন, আমার ধান খুব ভালো হয়েছিলো। হঠাৎ নেকব্লাষ্ট ধরে ক্ষেতের অনেক অংশের ধান গুলো পাতান হয়ে যাচ্ছে। কয়েক প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেও ভালো ফল পাচ্ছি না। আর পরামর্শ দিতে এখন পর্যন্ত এ এলাকায় কৃষি অফিসের কাউকেও চোখে পড়েনি আমার।
ধানে নেকব্লাষ্ট সংক্রমণ বিষয়ে জানতে চাইলে খামার বাড়ি লালমনিরহাট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: শামীম আশরাফ বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় বোর ধান চাষাবাদ হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যা (লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৪৫০ হেক্টর বেশি)। ইতিমধ্যে চাষাবাদকৃত ধানে নেকব্লাষ্ট সংক্রমণ হয়েছে ৬.৯ হেক্টর।
এরমধ্যে বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে ৪.৫ হেক্টর জমির নেকব্লাষ্ট দমন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমের নেকব্লাষ্ট সংক্রমণ ঠেকাতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।