লালমনিরহাটের ঐতিহাসিক স্থান সিন্দুরমতি দীঘি। এজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান এ দিঘীরপাড়। দীঘিটি লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত। আয়তন ১৬.০৫একর।
এ দিঘীরপাড়ে রয়েছে সময় কাটানোর ও বেড়ানোর অনেক জায়গা। দেশের অনেক জায়গা থেকে ও অনেকেই এখানে বেড়াতে আসে।প্রায় সারা বছর জুড়েই এখানে মেলা বসে। তবে প্রতিদিন ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত থাকে এ দীঘিরপাড়।
হিন্দু ধর্মাম্বলীদের কাছে এটি একটি তীর্থস্থান। জনশ্রুতি আছে, শ্রীলংকা থেকে আগত জনৈক রাজ নারায়ণ চৌধুরী ছিলেন নিঃসন্তান। তিনি সন্তান লাভের আশায় এ দীঘি খনন করেছিলেন। পরে তার ঘরে দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে রাজ নারায়ণ তাদের নাম রাখেন সিন্দুর ও মতি।
সিন্দুরমতি দীঘি খনন করার পর দেখা যায় জোয়ারে পানি উঠছে না। তখন রাজ নারায়ন চৌধুরী স্বপ্নে আদেশপ্রাপ্ত হন যে,জমিদার রাম ভাইকে দীঘির ঠিক মাঝখানে নবমীর দিনে পূজার আয়োজন করতে হবে। পূজার সময় রাজনারায়ণ এর দুই কন্যা সিন্দুর ও মতি ও সাথে অবস্থান করে।পূজা চলাকালীন সময় হঠাৎ প্রচন্ড বেগে পানি উঠতে থাকে। সবাই উপরে উঠতে পারলে ও সিন্দুর ও মতি উঠতে পারেনি। তারা এই পানিতে ডুবে মারা যায়।
সিন্দুরমতি দীঘিরপার ঘুরতে গিয়ে কথা হয় পুর্ণার্থী রমেস সেন(৬২) সাথে। তিনি বলেন, আমার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। আমি প্রায়ই এখানে আসি।এখানে বসন্তের পুজা হয়।শ্রীকৃষ্ণের পুজা হয়,শিব পুজা ও হয়।
এখানে ভোলানাথের মন্দির আছে, সেখানে পুজা করা হয়। মাঝেমধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয় সেগুলোতে অংশগ্রহণ করি।এবং ঘাটে পুর্ণার্থীরা বিভিন্ন ধরনের পুজা,আর্চনা করে তাতেও অংশগ্রহণ করি।দর্শনার্থী কবিতা রানী(৩২)বলেন, আমার পরিবারের সবাই মাঝেমধ্যেই আসি।এখানে দেব-দেবী আছে।এখানে আসলে দেব-দেবীর দর্শন করি ও পুজো দেই।কলেজ ছাত্রী পিয়াংকা চক্রবর্তী বলেন, আমরা বান্ধবীরা সবাই সময় পেলেই এখানে ঘুরতে আসি।এখানে ঘুরতে খুব ভালো লাগে।মনটাই ভালো হয়ে যায়।
পিয়াংকার বান্ধবী শ্রাবন্তী জানান, প্রতিবছর এখানে মেলা ও পুজার আয়োজন করা হয়। তাতে,দেশের বিভিন্ন স্থান ছাড়া ও ভারত থেকে ও বিপুল সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুর্ণার্থীর আগমন ঘটে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে সরকারি ভাবে এ দীঘিটি সংস্কারের সময় প্রাচীন মুদ্রা ও মুর্তি পাওয়া যায়। সেসব মুদ্রা ও মুর্তি বর্তমানে জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।