স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিভৃত পল্লীতে বেড়ে ওঠা বদরুল এখন একজন স্বশিক্ষিত সমাজ-কর্মী। কাজ করছেন আর্ন্তজাতিক সংস্থায়। কাজের সাফল্য আর স্বীকৃতিই তার কাজের অনুপ্রেরণা। তিনি ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত প্রান্তিক দূর্যোগ-প্রবন কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চিলমারী ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম ঘাঁটি। বদরুল ও তার পরিবার মুক্তিযুদ্ধ সহ চিলমারীর বন্যা, খরা, মহামারী সহ বিভিন্ন দূর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। অনাহারে অর্ধাহারে থাকা আলমের কৈশোরের সেই স্মৃতি এখনো সজীব। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পাশের পর বাধ্য হয়ে ১৯৮৪ সালে তিনি তার পরিবারকে সাহায্য করার জন্য সামান্য বেতনে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দেন।তারপর উচ্চ শিক্ষার জন্য উচ্চ বিদ্যাপিঠে পদচারনার সূযোগ না হলেও পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা তিতুমীর কলেজ থেকে ¯œাতক ডিগ্রী পাশ করেন।
বিশ^স্থতা, আন্তরিকতাকে পুঁজি করে বদরুল আলম ১৯৮৪ সাল থেকে এযাবৎ বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সহিত কাজ করে আসছেন। কর্মজীবনের মাঝে থেকেও তিনি স্কুলগামী ছেলেমেয়ে, চিলমারীর জনগণ এবং বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ-বিশেষত দূর্যোগ-প্রবন এলাকার পশুসম্পদ সংরক্ষণ এবং চিকিৎসার উপর বদরুল আলমের লিখিত “চিলমারীর মত দূর্যোগ-প্রবন এলাকায় গবাদিপশু এবংমুরগির চিকিৎসায় ঔষদি গাছ-গাছড়ার ব্যবহার” বইটি জন্য ১৯৯৯ সালে’দি আর্কলটনট্রাস্ট (যুক্তরাজ্য)’ থেকে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার লাভকরেন।
তাছাড়া তিনি উইনরোক ইনটারন্যাশনাল সংস্থার”ফ্যামিলি বাজেটিং প্রোজেক্ট”এর টিম লিডার ড. ব্রুসকারী, এসকর্ডল্যান্ড, কর্তৃক বেস্ট কর্মী হিসাবে সার্টিফিকেট অর্জনকরেন। পশু চিকিৎসা গবেষনায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য সাংবাদিক সমন্বয় পরিষদ, চিলমারী ইউনিটের পক্ষ থেকে ২০০২ সালে তাকে সম্মাননা পত্র প্রদান করা হয়। ২০২০ সালে জাতীয় গোদ নিমূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে চিকিৎসক কার্যক্রম এর অধীন এ্যাসেন্ড প্রোজেক্টে অসাধারন সাফল্যেও জন্য প্রফেসর ডাঃ মোঃ নাজমুল ইসলাম, পরিচালক, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইনডিরেক্টর, সিডিসি, ডিজিএইচএস এবং প্রফেসর ডাঃ বে-নজির আহমেদ, কান্ট্রি ডিরেক্টর, এ্যাসেন্ট বাংলাদেশ কর্তৃক বেস্ট ডিসট্রিক কোর্ডিনেটর সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
তিনি বর্তমানে লেপ্রা বাংলাদেশ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় মনিটরিং অফিসার হিসাবে লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলার কুষ্ঠ ও গোদ রোগ নির্মুল কাজের দায়িত্বে রয়েছেন। কাজের সফলতার জন্য লেপ্রা বাংলাদেশ কর্তৃক তিনি ২০২১ সালের সংস্থাটির বেস্ট ইমপ্লোয়ী নির্বাচিত হন এবং পদক লাভ করেন।
বদরুলের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সংস্থার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবায় কাজ করে আসছি। আন্তরিকতা, ধৈর্য্য আর আদর্শ নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই সে কাজে সফলতা আসে।