মোঃ রাশেদুল ইসলাম, পঞ্চগড় ।। পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও পার্শবর্তী এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা অতিরিক্ত । ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে জীবন যাপন করছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ, পাথর শ্রমিক, স্থল বন্দর কুলি শ্রমিক, পর্যটক সহ হাজারো মানুষ ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারত ও ভুটান থেকে স্থল বন্দর দিয়ে আসা পথর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে পাথর ভাঙ্গা মেশিনের সাহায্যে ভেঙ্গে বিভিন্ন সাইজে রূপান্তরিত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করে। পাথর ভাঙ্গার সময় বিষাক্ত ধুলিকনা বাতাসে মিশে মারাত্মক ভাবে বায়ু দূষিত হয়। আবার পাথর ভাঙ্গা মেশিনে কর্মরত শ্রমিকরা কোন প্রকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই দিনের পর দিন সাস্থ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে অনেক শ্রমিক শ্বাসকষ্ট সহ অনেক মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাথর ভাঙ্গা মেশিন হতে নির্গত বিষাক্ত ধুলোর জন্য এই এলাকায় বসবাস করা খুব কঠিন হয়ে গেছে ।পাথর ভাঙ্গা মেশিন হতে সৃষ্ট ধুলোয় ঘরের ভেতর প্রবেশ করে ।বাচ্চারা ঠিক মত পড়াশোনা করতে পারে না।এসব ধুলোয় খাবার নষ্ট হয়ে যায় ।রাত্রে ঠিকমতো ঘুমানো যায় না । শ্রমিকরা জানান, পঞ্চগড়ে তেমন কোনো আয়ের উৎস নেই ।সামান্য বেতনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় । আর এখানে কাজ না করলে খাবো কি।
আবার বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াতরত অনেকেই জানান, বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর চারদেশীয় আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর ।কিন্তু ধুলোয় ঢেকে গেছে সবকিছু ।
বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, আমরা আগে এরকম জানলে কখনোই এখানে ঘুরতে আসতাম না। কুয়াশায় নয় বরং সারাদিন ধুলোয় ঢেকে থাকে স্থল বন্দর সহ পার্শবর্তী পুরো এলাকা।পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে এসে এখন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার । আবার এর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দ্বায়ী করছেন অনেকেই। প্রশাসনের অবহেলা ও দ্বায়িত্ব হীনতার জন্যই আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর বা উত্তরের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে এখন মানুষ ঘুরতে যেতে ভয় পায় । অথচ পাথর ভাঙ্গার সময় যদি তাতে পানি ব্যবহার করে এবং রাস্তায় পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তবেই এ সমস্যা অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব ।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, যারা সরকারি খাস জমি ব্যবহার করে পাথর ভাঙ্গা মেশিনের সাহায্যে পাথর ভেঙ্গে ব্যবসা করছে তাদের সরকারি জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে । তার পরেও কেউ যদি জায়গা খালি করে নিজস্ব জায়গায় স্থানান্তরিত না হয় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।এবং স্থল বন্দর এলাকায় ধুলো অপ্রস্বারনের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে ।আমরা এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করবো ।