গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ভালোবাসা দিবসে লালমনিরহাট পৌরসভা এলাকার ময়লা ফেলার একটি ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতক কন্যা শিশুটির পরিচয় পাওয়া গেছে।
এদিকে বুধবার (২৩ফেব্রুয়ারী) বিকালে শিশুটির ঠাই হয় রাজশাহীর শিশুমনি নিবাসে। ৮দিন চিকিৎসার পর আদালতের আদেশে রাজশাহীর শিশুমনি নিবাসে প্রেরন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা।
এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিশুটির পরিচয় পেয়ে অভিযান চালিয়ে শহরের সাহেবপাড়া এলাকার একটি রেলওয়ে কোয়ার্টার থেকে ৩জনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। এরা হলো,ওই কন্যা শিশুটির জন্মদাতা মা কলেজ ছাত্রী (১৭), তার ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীন (৩২) ও মা লুৎফা বেগম (৪৫)।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর থানার ওসি শাহ আলম স্থানীয় সাংবাদিকদের থানায় ডেকে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানান, ওই কলেজ ছাত্রীর সাথে তার ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীনের প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে শারিরীক সম্পর্ক হয়। এতে গর্ভবতী হয় ওই কলেজছাত্রী।
প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই কলেজছাত্রী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরদিন ভোর রাতে সবার অগোচরে হাসপাতালের বাথরুমে সন্তান প্রসব করে। পরে মা লুৎফা বেগম ও ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীনের সহায়তায় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসে শহরের কালিবাড়ী এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাশে পৌরসভার একটি ডাস্টবিনে ওই শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে যায়।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ শিশুটি উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ফেব্রুয়ারী) বিকালে ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক কন্যা শিশুটির পরিচয় পাওয়া গেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ৩জনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
তাদের স্বীকারোক্তি মতে শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে শিশুটির জন্মদাতা পিতা ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ নেওয়াজ মোরশেদ জানান, শিশুটিকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পর নিয়মানুযায়ী তাকে আদালতের নির্দেশে বুধবার রাজশাহীর শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে সদর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন কালীবাড়ি এলাকার একটি ময়লা ফেলা ডাস্টবিন থেকে নবজাতক শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর তিনি থানায় একটি লিখিত এজাহার দেন। পরে ধারা-১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০৭/৩১৭ রুজু করে থানা পুলিশ। তারই পেক্ষিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী আদালত শিশুটিকে শিশু মনি নিবাসে প্রেরণ করা হয়।