টেস্ট ক্রিকেটে এমন দিন খুব কমই আসে বাংলাদেশের। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে। টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ হয়ে গেলো এবং এখনও পর্যন্ত টেস্টের চালকের আসনে বাংলাদেশ- বিষয়টা স্বপ্ন নয়, সত্যি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে তৃতীয় দিন শেষে ৭৩ রানের লিড নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশের এমন স্বপ্নিল দিনে মিশে থাকল ব্যক্তিগত আক্ষেপ। আগের দিন ফিফটিকে তিন অঙ্কে রূপ দিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। আজ (সোমবার) ম্যাচের তৃতীয় দিনে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও তিন অঙ্ক ছুতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। মুমিনুল হক আর লিটন দাস আউট হয়েছেন ৮০ রানের গণ্ডি পার করে।
তবে দিন শেষে স্কোর দিচ্ছে স্বস্তির সুবাতাস। দিনের খেলা শেষে ৬ উইকেট হারানো টাইগারদের সংগ্রহ ৪০১ রান। এতে কিউইদের করা প্রথম ইনিংসের ৩২৮ রান টপকে ৭৩ রানের লিড লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এই লিড আরো বাড়িয়ে নিতে ইয়াসির আলি রাব্বি ১১ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ২০ রান নিয়ে মঙ্গলবার চতুর্থ দিন শুরু করবেন।
নিউজিল্যান্ডের থেকে ১৫৩ রানে পিছিয়ে হাতে ৮ উইকেট নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ৭০ রানে ব্যাট করতে নামা জয় আজ দ্বিতীয়বার ব্যাট উঁচানোর সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেন। প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংসের সমাপ্তি টানলেন আর মাত্র ৮ রান যোগ করে। ওয়েগনারের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়েছিলেন। শরীর বলের পজিশনে গেলেও শট ছিল অনিয়ন্ত্রিত। টাইমিংয়ে গড়বড় হয়। ফলে গালিতে ক্যাচ যায় অতি সহজেই। নিকোলস সেই ক্যাচ নিয়ে ওয়াগনারকে তৃতীয় উইকেটের স্বাদ দেন।
এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মুমিনুল আর মুশফিক। যদিও স্কোর বোর্ডে খুব বেশি রান এনে দিতে পারেনি এ জুটি। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বোলিং করছিলেন বোল্ট। নিজের পরিকল্পনাতে সফল বাঁহাতি পেসার। স্টাম্পের ওপর ফুলার লেন্থ বলের সঙ্গে হাল্কা সুইং। তাতে বল মিস করে বোল্ড মুশফিক। মুশফিক ৫৩ বল খেলে ১২ রান করে আউট হলে ভাঙে ১৯ রানের পার্টনারশিপ। এই রান করতে দুজন বল খেলেন ১১০টি।
পরে লিটন দাসকে নিয়ে ১৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মুমিনুল। এর ফাঁকে দুজন অর্ধশত যেমন ছুঁয়েছেন, তেমনি দলকে এনে দিয়েছেন লিড। তবে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে পারলেন না মুমিনুল-লিটন। নিজের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে মুমিনুল ফিরলেন ৮৮ রানে। লিটন আউট হন ৮৬ রান করে। ট্রেন্ট বোল্টের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট হন মুমিনুল। ফেরার আগে ২৪৪ বলের ইনিংসটি সাজান ১২টি চারের মারে। মুমিনুলের আউট হলে পঞ্চম উইকেটে ভাঙে ১৫৮ রানের পার্টনারশিপ।
শতকের দিকে ছুটেছিলেন লিটন। সতীর্থের বিদায়ের পর সাজঘরে তিনিও। বোল্টের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে ১৭৭ বলের ইনিংসে খেলেন ১০টি চারের মার।