মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি ৷। একটি তফসিলি ব্যাংক থেকে চল্লিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তোফাজ্জল হোসেন। সাড়ে ১৭ হাজার টাকা পরিশোধের পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এখন সুদে আসলে টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২লাখ ১৮ হাজার ৫শ ৪৩ টাকা।
স্বামীর মৃত্যুর পরও এক লাখ ১৮ হাজার ৫শ ৪৩ টাকা সুদের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন মোতাহারা বেগম। সুদ মওকুফের জন্য আবেদন দিলে তাতে কর্ণপাত করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করতেন। ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি জনতা ব্যাংক লিমিটেড শঠিবাড়ী শাখায় ৪০ হাজার টাকা চাকরিজীবী ঋণ নিয়েছিলেন।
এরপর তিনি শারিরীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এ কারণে সময়মত ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। তবে তাঁর জীবদ্দশায় বিভিনś সময়ে সাড়ে ১৭’হাজার টাকা পরিশোধ করেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ্য থাকার পর তিনি ২০১৭ সালের ১০মে মৃত্যুবরণ করেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে অতি কষ্টে জীবন-যাপন করেছেন মোতাহারা বেগম। এরপরও স্বামীর ঋণের দায় থেকে মুক্তির জন্য ধার-দেনা করে তিন দফায় ৮৩ হাজার ২শ টাকা পরিশোধ করেন।
পূর্বের সাড়ে ১৭ হাজারসহ মোট এক লাখ সাত হাজার টাকা পরিশোধের পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও ৭১ হাজার ৫শ ৪৩ টাকা দাবি করে চিঠি দিয়েছে।
জনতা ব্যাংক শঠিবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক মঈদুল হক সরকার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে। সুদ বাবদ অনাদায়ী ৭১ হাজার ৫শ ৪৩ টাকা দ্রতই পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু অসহায় দরিদ্র মোতাহারা বেগম সুদের টাকা পরিশোধ করতে অক্ষম।
তিনি বলেন, ব্যাংক ম্যানেজারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আমি ঋণ খেলাপীর মামলা নিষ্পত্তি বাবদ ৮ হাজার টাকা এবং তিন কিস্তিতে ৭৫ হাজার ২শ টাকা পরিশোধ করেছি। অবশিষ্ট ৭১ হাজার ৫শ ৪৩ টাকা মওকুফের আবেদন করেছি।
কিন্তু পরে ম্যানেজার সাহেব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। উল্টো সুদের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক লিমিটেড শঠিবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক মঈদুল হক সরকার বলেন, নিয়মিত ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায ঋণ খেলাপী হন। মামলা হয়েছে। চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ বেড়েছে। তাঁর স্ত্রী সুদ মওকুফের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ফেরত পাঠিয়েছে।’